November 24, 2024 1:01 am

বর্ধমানের এই গ্রামে পুরী যাবার পথে এসেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। আজও রয়েছে তাঁর পদচিহ্ন

গলসি বার্তা ওয়েব ডেস্ক –  জানেন কি এ রাজ্যের কোথায় রয়েছে শ্রীচৈতন্যের স্নেহধন্য হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ি। গ্রামের শেষ প্রান্তে হিংস্র জন্তুতে ভরা জঙ্গলের মাঝে বসে কঠোর সাধনা করেছিলেন যবন হরিদাস। তাঁর সাধনায় খুশি হয়ে পুরী যাবার পথে সেই গ্রামে সপার্ষদ এসেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। আজও সেখানে রয়েছে শ্রীচৈতন্যের পদচিহ্ন।

বর্ধমানের জামালপুরের কুলীনগ্রাম। শ্রীচৈতন্যের জন্মেরও আগে অবিভক্ত বাংলার মধ্যে এই গ্রামেই কৃষ্ণনামের ঢেউ উঠেছিল এই কুলীনগ্রামে। এই গ্রামেরই বাসিন্দা মালাধর বসু লিখেছিলেন শ্রীকৃষ্ণবিজয় কাব্য। কুলীনগ্রামে বৈষ্ণব ধারার প্রভাব সেই সময় থেকেই। সেই কুলীনগ্রামের বাসিন্দারা খুবই কষ্টের মধ্যে আছেন জেনে যবন হরিদাসকে কুলীনগ্রামে পাঠান শ্রীচৈতন্য।

সেসময় অহিন্দু বা মেল্ছদের যবন বলা হতো। তারা একপ্রকার অস্পৃশ্য ছিলেন। ১৪৫০ সালে হরিদাস ঠাকুরের জন্ম বাংলাদেশের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে।  ছোটবেলায় তাঁর বাবা মা মারা যান। বাবার সুহৃদ হাবিবুল্লা কাজির কাছে বড় হয় হরিদাস। সেই জন্যই যবন হরিদাস নামে পরিচিত হন তিনি। বাল্য অবস্থাতেই তাঁর মনে বৈরাগ্য দেখা দেয়। তিনি পালক পিতার সঙ্গ ত্যাগ করে বেনাপোলের কাছে কুটীর তৈরি করে বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহন করে সাধনা শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় জমিদার রামচন্দ্র খানের অত্যাচারে বেনাপোল ছাড়তে বাধ্য হন হরিদাস। তিনি নদীয়ায় গিয়ে শ্রীচৈতন্যের সাহচর্যে আসেন। তাঁরই নির্দেশে কুলীনগ্রাম যান হরিদাস।

কুলীনগ্রামের শেষপ্রান্তে হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ি। এটি হরিদাস গৌড়িও মঠ নামেও পরিচিত। আবার হরিদাসের আখড়াও বলা হয়। এখানেই অগ্রহায়ন মাসে এসে নাম ভজনা শুরু করেন যবন হরিদাস। গাছের ফল জুটলে ভালো। নচেত দিঘির জল পান করেই দিন কাটাতেন তিনি। তাঁর সাধনায় খুশি হয়ে পুরী যাওয়ার পথে সপারিষদ কুলীনগ্রামে আসেন শ্রীচৈতন্য। তাঁর সঙ্গেই পুরী চলে যান হরিদাস ঠাকুর। তিনি যে গাছের তলায় বসেছিলেন সেই গাছ, সেখানে তাঁর পদচিহ্ন আজও আছে। রয়েছে হরিদাসের দিঘি। প্রতিদিন নামসংকীর্তন হয় এই মঠে।