November 24, 2024 1:32 am

ভারতে জি ২০ , ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ – আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতির এক গভীর দর্শন – বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

ভারতে জি ২০ , ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ – আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতির এক গভীর দর্শন – বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

PB News Desk: জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষে নয়া দিল্লিতে আসতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধানেরা। রাজধানী দিল্লির প্রতিটি ক্ষেত্র এই মুহূর্তে নজরদারির আওতায়। আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি ২০ সম্মেলন। রাজধানী দিল্লির প্রগতি ময়দানে এই মেগা ইভেন্টে যোগ দিতে দিল্লিতে পা রাখবেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। কি জানালেন প্রধানমন্ত্রী ?

• জি ২০-র সভাপতি হিসেবে, আমরা বিশ্বব্যাপী এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের পরিধি বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছি। প্রতিটি কণ্ঠ যাতে শোনা যায়, প্রতিটি দেশ অবদান রাখতে পারে, তার চেষ্টা করেছি।

• বড় পরিসরের কোনও কাজ করার কথা আসলে সহজেই ভারতের নাম মাথায় আসে। জি ২০-র সভাপতিত্বও তার ব্যতিক্রম নয়। এটি ভারতে একটি গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ভারতের ৬০টি শহরে ২০০-র বেশি সভা হয়েছে। ১২৫ টি দেশের প্রায় ১ লক্ষ প্রতিনিধি এসেছেন।

• আমি নিশ্চিত জি২০-র প্রতিনিধিরা ভারতের জনসংখ্যা, গণতন্ত্র, বৈচিত্র্য এবং উন্নয়ন নিজেরাই উপলব্ধি করবেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মোকাবিলায়, মোটা দানা বা সবুজ শস্যকে কাজে লাগানো যেতে পারে।

• ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ – আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতির এক গভীর দর্শন। এর অর্থ, ‘পুরো বিশ্ব এক পরিবার’। ভারতের জি ২০ সভাপতিত্বের সময় , এই দর্শন মানবকেন্দ্রিক অগ্রগতির আহ্বান হিসাবে নিজেকে প্রকাশ করেছে। এক পৃথিবী হিসাবে, মানব জীবনের উন্নতির জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি আমরা।

• প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাওয়ার আদর্শ, ভারতে প্রাচীনকাল থেকেই ছিল এবং আধুনিক সময়েও আমরা জলবায়ু পরিবর্তমের মোকাবিলায় অবদান রাখছি। গ্লোবাল সাউথের দেশগুলি উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এই সময়ে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায়, ‘কী করা উচিত নয়’ থেকে ‘কী করা যায়’ – এই চিন্তাভাবনা ধরে এগোতে হবে।

• করোনা মহামারির পরে বদলে গিয়েছে বিশ্ব-ব্যবস্থা। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। প্রথমত, জিডিপি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মানবকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে সরে যাওয়ার উপলব্ধি তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সরবরাহ শৃঙ্খলে দৃঢ়তা এবং নির্ভরযোগ্যতার গুরুত্ব স্বীকার করছে গোটা বিশ্ব। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারের মাধ্যমে বহুপাক্ষিকতার ধারণাকে উন্নীত করার সম্মিলিত ডাক এসেছে।

মেগা ইভেন্টে আয়োজনের ক্ষেত্রের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে অবগত রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ৪০ জন রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, কোনও কোনও দেশের বিদেশমন্ত্রী আসছেন। প্রত্যেক রাষ্ট্রপ্রধানের ডেলেগেশন টিমে ১৫০ থেকে ২০০ জন সদস্য থাকবেন। এর জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন থাকবে , জানিয়েছেন জি-২০ স্পেশাল সেক্রেটারি (অপারেশন) মুক্তেশ পরদেশী।

• জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মোকাবিলায়, মোটা দানা বা সবুজ শস্যকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এই গোষ্ঠীর সভাপতিত্বের দায়িত্ব গ্রহণের সময়ই আমি উন্নয়নশীল দেশ, গ্লোবাল সাউথ ও আফ্রিকার দেশগুলির প্রান্তিক আকাঙ্খাকে মূলধারায় আনার বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলেছিলাম। এই চিন্তা থেকেই ভারত ‘ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট’-এর আয়োজন করেছিল। ভারতের সভাপতিত্বে নেওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

ভারতের জন্য, G20-এর সভাপতিত্ব শুধুমাত্র একটি উচ্চ-স্তরের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নয়। গণতন্ত্রের মা এবং বৈচিত্র্যের মডেল হিসাবে, আমরা বিশ্বের কাছে এই অভিজ্ঞতার দরজা খুলে দিয়েছি। ভারতের অর্থনীতি, দ্রুত গতিতে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। এটা কোন দুর্ঘটনা নয়। আমাদের সহজ, ব্যবহারিক এবং টেকসই পদ্ধতি গুলি দুর্বল এবং প্রান্তিক জনগণকে উন্নয়ন যাত্রায় নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। আজ ভারত মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নের মন্ত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।